একটি বামন ও এক মেয়ের গল্প

একদা এক রাজ্যে এক কৃষক বাস করতো। তার একটি মেয়ে ছিলো। মেয়েটি কয়েকটা পাটকাঠি একত্রে করে সেগুলো থেকে সোনা তৈরি করতে পারতো।

পুরো রাজ্যে খবরটি ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। একদিন রাজার কানে খবরটি পৌঁছালো। রাজা কৃষকের বাসায় আসলেন। কৃষককে কয়েকটি পাটকাঠি দিয়ে তিনি বললেন-

“তোমার মেয়ে যদি কালকের মধ্যে এই পাটকাঠিগুলো থেকে সোনা বানাতে পারে তাহলে আমি তাকে বিয়ে করবো।”

কৃষক বললো, “ঠিক আছে, হুজুর। আমার মেয়ে কালকের মধ্যে এগুলোকে স্বর্ণে রূপান্তর করে দিবে।”

রাতে পাটকাঠিগুলো নিয়ে বসে বসে বেশ দুশ্চিন্তা করছিলো কৃষকের মেয়ে। একরাতে পাটকাঠি থেকে সোনা বানানো মোটেও সম্ভব না।

এমন সময় এক বামন আসলো। সে কৃষকের মেয়েকে বললো-

“আমাকে দাও। আমি আজ রাতের মধ্যে পাটকাঠিগুলো থেকে তোমাকে সোনা বানিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু বিনিময়ে আমি যা চাইবো, তা-ই দিতে হবে।”

কৃষকের মেয়ে বললো, “ঠিক আছে।” বামন মুহূর্তের মধ্যে পাটকাঠিগুলো থেকে সোনা বানিয়ে দিলো। পরেরদিন রাজা আবার তাঁর দলবল নিয়ে কৃষকের বাসায় আসলেন।

দেখলেন, কৃষক কন্যা পাটকাঠিগুলোকে সোনায় রূপান্তর করে ফেলেছে। রাজা খুব খুশি হলেন এবং কৃষকের মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে গেলেন।

কয়েক বছর পরে রাজা-রাণীর ঘর আলো করে এক পুত্র সন্তান জন্ম নিলো। এ খবর পেয়ে বামনটি রাণীর কাছে আসলো এবং বললো, “আমি তোমার ছেলেকে নিতে এসেছি।”

রাণী বললেন, “এত বছর তুমি কিছু চাওনি, আর এখন আমার বুকের ধনকে কেড়ে নিতে আসছো!! কোনোই কী উপায় নাই রাজপুত্রকে আমার কাছে রেখে যাওয়ার!?”

বামন বললো, “ঠিক আছে। আমি তোমাকে একটি কবিতা বলবো। কবিতাটি শুনে তুমি যদি আমার নাম বলতে পারো তাহলে আমি রাজপুত্রকে তোমার কাছে রেখে যাবো।”

রাণী কবিতাটি শুনতে চাইলেন। বামন বললো, “আগেরদিন যেমন ছিলো, আজ নয়ত তেমন। হঠাৎ এসে বামন নিতে চায় মায়ের বুকের ধন।”

কবিতাটি মনোযোগ দিয়ে শোনার পর রাণী চিৎকার করে বললেন, “বামন, এখুনি তুমি আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও।”

রাণীর মুখে নিজের নাম শুনে বামন রাজপুত্রকে না নিয়েই সেখান থেকে চলে গেলো।

শিক্ষা: ধৈর্যের সাথে কাজ করলে তুমি কখনোই হারবে না