চোখের ডাক্তার

এক যে ছিল বুড়ি। তার চোখ খারাপ হয়েছিল। তিনি এক চোখের ডাক্তারকে চোখ দেখাতে এলেন।

ডাক্তারবাবুকে বললেন, “ডাক্তার বাবু, দয়া করে আমার চোখ সারিয়ে দিন। আমার চোখ সেরে গেলে আপনাকে আমি একটি খুব দামি উপহার দেব। আর হ্যাঁ, আমাকে আমার বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।”

ডাক্তারটি বললেন, “ঠিক আছে। আপনি আজ বাড়ি চলে যান। কাল থেকে আমি আপনার বাড়িতে গিয়ে আপনার চোখের অসুখের চিকিৎসা করব।”

অতএব পরদিন ডাক্তার বাবু যথাসময়ে বুড়ির বাড়িতে এসে দেখলেন বুড়ির ঘরে নানা মূল্যবান জিনিসে ভর্তি। ঘরে আর কেউ থাকে না। বুড়ি একা।

এইসব দেখে ডাক্তারের মনে এক দুষ্টু বুদ্ধি গজিয়ে উঠল। ডাক্তারের বেশ লোভ হলো।

এরপর থেকে তিনি প্রায় রোজই আসতে লাগলেন—এসে বৃদ্ধার চোখে একটা মলম লাগিয়ে বলতে লাগলেন—এবার আপনাকে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকতে হবে।

সেই ফাঁকে ডাক্তার একে একে প্রতিদিনই বুড়ির মূল্যবান জিনিসগুলি সব সরাতে লাগলেন।

দিনের পর দিন এমনি করেই বুড়ির মূল্যবান জিনিসগুলি সব যখন ডাক্তারের নেওয়া হয়ে গেল, তখন তিনি বুড়িটিকে বললেন, “আপনার চোখ এবার সম্পূর্ণ ভাল হয়ে গেছে। এবার আমার বকশিসটা দিয়ে দিন।”

বুড়িটি বখশিস দিল না এবং কোনো উত্তরও দিল না।

ডাক্তার এবার আদালতে বুড়িটির নামে নালিশ করল। এবং আদালতে বুড়িটিকে হাজির করালো।

বিচারক বুড়িটিকে বললেন, “চোখ সারলে ডাক্তারকে বকশিস্ দেবেন বলেছিলেন, এখনো তা দেননি কেন?”

বুড়িটি বলল, “হুজুর, চোখ তো আমার সারে নি হুজুর। বরং আগের চেয়ে চোখ আমার বেশি খারাপ হয়েছে।”

বিচারক বললেন, “কী করে তা বুঝলেন?”

বুড়িটি বলল, “ডাক্তারবাবু চিকিৎসা শুরু করবার আগে আমার চোখের অবস্থা এমন ছিল যে, আমি আমার ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্রগুলি বেশ ভালই দেখতে পেতাম। এখন আমি সেগুলির একটিও আর দেখতে পাই না।”

বিচারক সব বুঝতে পেরে ডাক্তারকে কঠিন শাস্তি দিলেন।

উপদেশ: অপরাধী সব সময় তার অপরাধের প্রমাণ রেখে যায়।