ডাংগুলি

বেলা ১১টা। মা দুপুরের রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ৭-৮ বছর বয়সী টুনু মাকে এসে বললো, “মা, আমি খেলতে যাচ্ছি।”

মায়ের উত্তরের অপেক্ষা না করেই টুনু বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল এমন সময় মা টুনুকে ডেকে বললো, “এই টুনু… ডাংগুলি খেলবি না কিন্তু। ডাংগুলি বড়দের খেলা।”

যদিও টুনু বন্ধুদের সাথে ডাংগুলি খেলতেই যাচ্ছিল তবুও সে হাত উঠিয়ে মাকে আশ্বস্ত করলো যে, সে ডাংগুলি খেলবে না পাছে মা যেতে না দেয়।

টুনু বাসা থেকে একটু দূরে যেতেই দেখলো বন্ধুরা তার জন্য অপেক্ষা করছে। টুনু তাদের উদ্দেশ্যে বললো, “চল… কে আগে শুরু করবে?”

একজন অস্পষ্ট কণ্ঠে বললো, “তুই কর।” টুনু বললো, “ঠিক আছে।”

প্রায় দুই ইঞ্চি লম্বা একটি লাঠি (গুলি) টুনু মাটিতে রাখলো। লাঠিটির দুই প্রান্ত সুচালো। এবারে একটি দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা লাঠি (ডাং বা ডান্ডা) দিয়ে গুলির এক সুচালো প্রান্ত আঘাত করলো।

গুলিটি লাফিয়ে উঠলো। সেই লাফানো অবস্থায় টুনু আবার গুলিতে ডাং মারলো এবং গুলিটি অনেক দূরে গিয়ে পড়লো।

টুনু এবারে ডাং-এর সাহায্য গুলির দূরত্ব মেপে রাখলো কেননা যার গুলি যতদূর যাব সে জয়ী হবে।

টুনুর গুলি ৬ ডাং দূরে গিয়েছে। এবার তার বন্ধুদের পালা। “এইবার তুই খেল।”, বলে ডাং-টা এক বন্ধুর হাতে দিয়ে টুনু তার পিছে গিয়ে দাঁড়ালো।

টুনুর বন্ধু ডাং দিয়ে গুলির প্রান্তে মারলো; গুলিটি লাফিয়ে উপরে উঠতেই সে আবার গুলিতে ডাং মারলো।

দ্বিতীয় ডাং খেয়ে গুলিটি লাফিয়ে সামনে যাওয়ার পরিবর্তে পিছে এসে টুনুর চোখের পাশে লাগলো। ব্যথায় টুনু চিৎকার করতে লাগলো।

আশেপাশে লোক জড়ো হয়ে গেলো। দ্রুত টুনুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো।

ডাক্তার টুনুকে দেখে বললো, “একটুর জন্য তোমার বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, টুনু। কিন্তু এখন থেকে সবসময় তোমাকে চশমা পড়ে থাকতে হবে।”

একথা শুনে টুনু মায়ের দিকে ফিরে মন খারাপ করে বললো, “মা… তোমার কথা শুনলে আজ আমার চশমা লাগত না!”