বন্ধুত্ব

পর্তুগালের এক শহরে একটি ছেলে ছিল। ছেলেটি বেশ ভালো ফুটবল খেলত। কিন্তু সে অনেক গরীব ছিল তাই তার পক্ষে কোনো ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি হওয়া সম্ভব ছিল না।

ভাগ্যক্রমে একদিন ছেলেটির স্কুলে এক স্কাউট আসেন। স্কাউটটি বললেন, “আজকে একটি ফুটবল ম্যাচ হবে। সেই ম্যাচে যে সবচেয়ে বেশি গোল করতে পারবে তাকে ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।”

ম্যাচ শুরু হলো।

এমন অনন্য সুযোগ কে-ই বা হাত ছাড়া করতে চায়! একাডেমিতে ভর্তির সুযোগ লুফে নেওয়ার জন্য স্কুলের সকল ফুটবলার প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলো।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলো দুইজন। সেই ছেলেটি আর তার এক বন্ধু, আলবার্তো ফ্যান্ট্রাউ। দুইজনেই দুর্দান্ত ফুটবলার। কেউই কাউকে ছাড় দেওয়ার পাত্র নয়।

সিদ্ধান্ত হলো টাইব্রেকারের।

টাইব্রেকারে একবার ছেলেটি গোল দেয় তো আরেকবার আলবার্তো। এভাবে টাইব্রেকারের শেষ রাউন্ড চলে আসলো। এই রাউন্ডে যে-ই জিতবে তার-ই ফুটবল ক্যারিয়ার পুরোদমে পাল্টে যাবে।

বল কাড়াকাড়ি করতে করতে আলবার্তোর পায়ে বল আসলো। গোল করাটাও আলবার্তোর জন্য বেশ সহজ ছিল কিন্তু সকলকে অবাক করে বলটি সে তার বন্ধুকে পাস করে দিল।

কোনোকিছু না ভেবেই গোল পোস্টের দিকে বলটি ছুঁড়ে ছেলেটি গোল করলো এবং ফুটবল একাডেমিতে নিজের জায়গা নিশ্চিত করলো।

কিছুক্ষণ পরে তার হুঁশ ফিরলো এবং আলবার্তোকে জিজ্ঞেস করলো—

“বন্ধু তুমি সহজেই গোল করতে পারতে; সেটি না করে বলটি আমার দিকে ছুঁড়ে দিলে কেনো!? তুমি এতবড় আত্মত্যাগ করলে কেনো?”

আলবার্তো হেসে উত্তর দিলো, “বন্ধু, আজকে কোনো কারণে হয়ত আমি ভালো খেলেছি কিন্তু তুমি সবসময়ই ভালো খেলো।

ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলে তুমি অনেক ভালো করবে। অনেক বড় ফুটবলার হবে।”

আলবার্তোর সেইদিনের ভাবনাটি একদম সঠিক ছিল। কেননা আলবার্তোর সেই বন্ধুটি এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলাদের একজন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

তবে এত বিখ্যাত ফুটবলার হয়েও ক্রিশ্চিয়ানো কিন্তু তাঁর বিপদের বন্ধুকে ভুলে যাননি। তিনি সবসময় আলবার্তোর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন এবং সর্বদা তার বিপদ-আপদে পাশে থাকেন।