এক যে ছিল মুচি। সে ঠিকমত জুতো সেলাই করতেও শেখেনি। তাই তার নিজের গ্রামে অন্ন জুটছিল না। সে তখন নিজের গ্রাম ছেড়ে অনেক দূর দেশে চলে এল।
সেই দেশে এসে নিজেকে সে ডাক্তার পরিচয় দিল। এবং ওষুধের মত দেখতে কতকগুলি বড়িকে বিষের ওষুধ বলে প্রচার করতে লাগল। তার প্রচারের গুণে এবং বোলচালে ভুলে লোকে তা প্রায়ই কিনতে লাগল।
ক্রমে তার ওষুধের ব্যবসা জমে উঠল। বেশ পয়সা হয়ে গেল তার। বরং তার খুব খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
একবার ওই দেশের রাজার এক পেয়ারের চাকরের খুব অসুখ হল। রাজা মুচিকে (ডাক্তারকে) ডেকে পাঠালেন।
যথাসময়ে মুচি রাজদরবারে হাজির হল। রাজা ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ ব্যক্তি। তাই চাকরের চিকিৎসার ভার দেবার আগে লোকটিকে তিনি একবার যাচাই করে নিতে চাইলেন।
রাজা এক গ্লাস জল রেখে তাতে যেন কিছু বিষ মিশিয়ে দিচ্ছেন এমন ভাণ করে বললেন, “এখন কি ওষুধ আছে তোমার—তা এতে দিয়ে তুমি এই জলটা খেয়ে ফেল দেখি—অনেক বক্শিস্ দেব তোমাকে৷”
মুচির মুখ শুকিয়ে এতটুকু হয়ে গেল। অগত্যা সে নিজের দোষ স্বীকার করে বলল, “ওষুধ-টষুধ তার কিছুই জানা নেই। তার বোলচালে মুগ্ধ হয়ে এখানকার লোকেরা তাকে একজন দক্ষ চিকিৎসক বলে মনে করেছে।”
শুধু তাই নয়, মুচি এখন তার এখানে আসার কারণ পর্যন্ত একে একে সব স্বীকার করল। রাজা তখন সব প্রজাদের ডেকে মুচির সত্যিকারের পরিচয় সকলের সামনে ফাঁস করে দিয়ে বললেন-
“যে অপদার্থ মুচির হাতে তার গাঁয়ের লোক তাদের জুতো মেরামত করতে দিতে সাহস পায় না, তোমরা এমন মূর্খ যে, না জেনেশুনে তারই হাতে তোমাদের জীবন রক্ষার ভার সঁপে দিয়েছিলে?”
উপদেশ: মূর্খ লোকদের জন্যেই জোচ্চোররা জোচ্চুরি করে চলে।