গোপাল একদিন পাশা খেলতে খেলতে দাঁতের যন্ত্রণায় ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিল। অসম্ভব যন্ত্রণা যাকে বলে।
যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে সে শুয়ে পড়ে কাত্রাতে কাত্রাতে বলতে লাগল, “দোহাই মা কালী! এ যাত্রায় আমার যন্ত্রণাটা কমিয়ে দাও….. আমি জোড়া-পাঁঠা বলি দেব মা- পুজো দেব ভাল করে তোমায় মা—”
কিছক্ষণ পরে মা কালীর কৃপায় তার যন্ত্রণার উপশম হল। সে আবার খোশ মেজাজে মনের আনন্দে পাশা খেলতে লাগল।
গোপালের পাশা খেলার সাথী এক সময় গোপালকে বললে, “মায়ের দয়ায় দাঁতের যন্ত্রণা তো চট্ করে সেরে গেল। মায়ের কাছে তাহলে জোড়া-পাঁঠা বলি দিচ্ছ তো? মনের বাসনা, পাঁঠা বলি হলে বলির মাংস খাওয়া যাবে।”
গোপাল পাশার চাল দিয়ে খোশ মেজাজে বললে, “যন্ত্রণা আমার এমনিতেই সেরে যেত। এ ব্যাপারে আর মা কালীর কেরামতি কোথায়? যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে কি বলতে কি বলে ফেলেছি, সেজন্য আবার জোড়া-পাঁঠা বলি দিতে হবে নাকি? মা কালী আমার মাথায় থাক!”
তারপর গোপাল দিব্যি খোশ মেজাজে পাশা খেলতে লাগল। ওদের কথায় আর পাত্তা দিল না। খেলার সাথির মন খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু কথায় বলে-ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
বেশ কিছু পরে গোপালের দাঁতের যন্ত্রণা আবার অসম্ভব রকম বেড়ে গেল। এবারকার যন্ত্রণা আগের চেয়েও ভয়ানক। গোপাল যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে মা কালীর উদ্দেশ্যে হাত জোড় করে কারাতে কাতরাতে বললে-
“হে মা করুণাময়ী, হে মা দয়াময়ী, হে মা জগজ্জননী – যে কথা বলেছি….. সেই কথাটিই ধরে নিলে মা? আমি কি সত্যি-সত্যিই বলেছি তোমার কাছে জোড়া- পাঁঠা বলি দেব না? এত বোঝ মা, ঠাট্টা বোঝ না?”
এবার খেলার সাথীর মুখে জোর হাসি ফুটে উঠল, বলির পাঁঠার প্রসাদ মাংস নির্ঘাত পাবে এই মনে ভেবে।