সত্যের কুয়ো

লোভে পড়ে একদিন এক ব্যক্তি মোল্লা নাসিরুদ্দিন হোজ্জার বিরুদ্ধে তার টাকা চুরির মিথ্যা অভিযোগ আনল এবং স্থানীয় বিচারকের কাছে সেই অভিযোগ পেশ করল।

ন্যায়বিচারের জন্য বিখ্যাত বিচারক হোজ্জাকে আদালতে ডেকে পাঠালেন। বিচারক বললেন, “হোজ্জা, এই ব্যক্তি দাবি করছে আপনি তার টাকা নিয়েছেন। এই বিষয়ে আপনার কি কিছু বলার আছে?”

বুদ্ধিমত্তার জন্য সুপরিচিত হোজ্জা শান্তভাবে উত্তর দিলেন, “আমি নির্দোষ, মাননীয় বিচারক। এটি প্রমাণ করতে আমি আপনাদের দুইজনকে ‘সত্যের কুয়ো’-এর কাছে নিয়ে যেতে চাই।”

এই অদ্ভুত প্রস্তাব পেয়ে বিচারক এবং অভিযোগকারী সত্যের কুয়োর ব্যাপারে জানতে আগ্রহী হলেন এবং হোজ্জার সাথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

হোজ্জাকে অনুসরণ করে তারা গ্রামের বাইরে একটি কুয়োর কাছে পৌঁছালেন।

কুয়োর একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে হোজ্জা গম্ভীরভাবে বললেন, “এটিই সেই জাদুকরি কুয়ো যে সত্য বলে দিতে পারে। এই কুয়োর সামনে কেউ মিথ্যা বললে কুয়ো তাকে ভেতরে টেনে নেয়।”

অভিযোগকারী কুয়োর সামনে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে তার মিথ্যা অভিযোগটি বলল, “হোজ্জা আমার টাকা চুরি করেছে।” কিন্তু কিছুই ঘটল না।

এবার হোজ্জার পালা। তিনি কুয়োর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি যদি এই ব্যক্তির টাকা চুরি করে থাকি তাহলে যেন এই কুয়ো আমাকে টেনে নেয়।” এ কথা বলেই তিনি একটি ছোট পাথর কুয়োর ভেতরে ছুড়ে দিলেন।

সবাই পাথরটি তলিয়ে যেতে দেখল। এবার হোজ্জা বিচারকের দিকে ফিরে বললেন, “দেখুন, কুয়ো রায় দিয়েছে। আমি এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছি, সুতরাং আমি নির্দোষ।”

বিচারক হোজ্জার বুদ্ধিমত্তা দেখে হাসলেন এবং মামলাটি খারিজ করে দিলেন। অভিযোগকারী তার ভুল বুঝতে পেরে লজ্জায় আদালত থেকে চলে গেলেন।