হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা

ভেজার নদীর তীরে অবস্থিত একটি শহর হ্যামিলিন। ছোট্ট ও সাজানো সেই শহরে মানুষের একদা একটাই দুঃখ ছিলো, ইঁদুর। 

শহর জুড়ে হাজার হাজার ইঁদুর হ্যামিলিনের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে ফেলেছিলো৷ তাই ইঁদুর তাড়ানো জন্য হ্যামিলিনের লোকজন উঠেপড়ে লেগেছিলো।

এমনই একসময় নানান রঙের আলখাল্লা, মাথায় চোঙ্গার মতো টুপি পরা এক লোক হ্যামিলিনের মেয়রের কাছে আসলো৷ হাতে তার লম্বা একটি বাঁশি৷ 

লোকটি মেয়রকে বললো, “আমি আপনাদের সমস্যার সমাধান দিতে পারবো। আমি হ্যামিলিন থেকে ইঁদুর বিতাড়িত করতে পারবো।”

খুশিতে আত্মহারা মেয়র বললেন, “তুমি যদি হ্যামিলিন থেকে ইঁদুর বিতাড়িত করতে পারো তাহলে তুমি যা চাইবে আমি তোমাকে তা-ই দিবো।”

লোকটি বললো, “আমি ১০০ স্বর্ণ মুদ্রা চাই।” মেয়র তাকে ১০০ স্বর্ণ মুদ্রা দিতে রাজি হলেন।

বাঁশিওয়ালা তার বাঁশি বাজাতে বাজাতে হ্যামিলনের পথে ঘুরতে লাগলো৷ বাঁশির অচেনা এক সুরের আকর্ষণে শহরের সব ইঁদুর দল বেঁধে বাঁশিওয়ালার পেছন পেছন ছুটতে লাগলো৷

ভেজার নদীর কাছে এসে থামলো বাঁশিওয়ালা। বাঁশির সুরে ইঁদুররা এতই বিমোহিত হয়ে গেছিলো যে, হাঁটতে হাঁটতে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লো।

ইঁদুর মুক্ত হলো হ্যামিলিন। এবারে বাঁশিওয়ালা তার পুরস্কার নিতে মেয়রের কাছে আসলো। মেয়র ৫০ স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে বাঁশিওয়ালাকে তাড়িয়ে দিলেন৷

বাঁশিওয়ালা আবার বাঁশি বাজাতে শুরু করলো। এবার সে বাঁশিতে ভিন্ন একটি সুর তুললো।

বাঁশিওয়ালার সুরের আকর্ষণে শহরের প্রতিটি ঘর থেকে শিশুরা বেরিয়ে আসতে লাগলো এবং বাঁশিওয়ালার পেছন পেছন ছুটতে লাগলো।

বাঁশি বাজাতে বাজাতে বাঁশিওয়ালা বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো৷ এরপর আর কোনোদিন হ্যামিলিনের বাচ্চারা ফিরে আসেনি৷ হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালাকেও আর কখনো দেখা যায়নি।

শিক্ষা: তুমি অন্যের সাথে যেমন আচরণ করবে, অন্যরাও তোমার সাথে তেমন আচরণ করবে