আমি সাগর পাড়ি দেবো, আমি সওদাগর।
সাত সাগরে ভাসবে আমার সপ্ত মধুকর।
আমার ঘাটের সওদা নিয়ে যাব সবার ঘাটে,
চলবে আমার বেচাকেনা বিশ্বজোড়া হাটে।
ময়ূরপঙ্খি বজরা আমার “লাল বাওটা” তুলে
ঢেউয়ের দোলায় মরাল সম চলবে দুলে দুলে।
সিন্ধু আমার বন্ধু হয়ে রতন মানিক তার
আমার তরি বোঝাই করে দেবে উপহার।
দ্বীপে দ্বীপে আমার আশায় রাখবে পেতে থানা,
শুক্তি দেবে মুক্তামালা আমারে নজরানা।
চারপাশে মোর গাংচিলেরা করবে এসে ভিড়
হাতছানিতে ডাকবে আমায় নতুন দেশের তীর।
আসবে হাঙর কুমির তিমি – কে করে তায় ভয়;
বলব, ‘ওরে, ভয় পায় যে – এ সে ছেলেই নয়।’
সপ্ত সাগর রাজ্য আমার, আমি বণিক বীর,
খাজ্না জোগায় রাজ্যে আমার হাজার নদীর নীর।
ভয় করি না তোদের দুটো দন্ত নখর দেখে,
জল-দস্যু, তোদের তরে পাহারা গেলাম রেখে
সিন্ধু-গাজি মাল্লামাঝি, নৌ-সেনা ঐ জেলে,
বর্শা দিয়ে বিঁধবে তারা, রাজ্যে আমার এলে।
দেশে দেশে দেয়াল গাঁথা রাখব নাকো আর,
বন্যা এনে ভাঙব বিভেদ করব একাকার।
আমার দেশে থাকলে সুধা তাদের দেশে নেবো,
তাদের দেশের সুধা এনে আমার দেশে দেবো।
বলব মাকে, ‘ভয় কি গো মা, বাণিজ্যেতে যাই!
সেই মণি মা দেবো এনে তোর ঘরে যা নাই।
দুঃখিনী তুই, তাই তো মা এ দুখ ঘুচাব আজ,
জগৎ জুড়ে সুখ কুড়াব – ঢাকব মা এ লাজ।’
লাল জহরত পান্নাচুনি মুক্তামালা আনি
আমি হব রাজার কুমার, মা হবে রাজরানি।