রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে,          বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে।       তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি          পরিচয় কোনো আছে নাকি,                    যাবে কোন্‌খানে।          আমি শুধু বলেছি, কে জানে। নদীতে লাগিল দোলা,…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি মেয়ে আছে জানি,            পল্লীটি তার দখলে, সবাই তারি পুজো জোগায়            লক্ষ্মী বলে সকলে। আমি কিন্তু বলি তোমায়            কথায় যদি মন দেহ— খুব যে উনি লক্ষ্মী মেয়ে           আছে…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একদিন দেখিলাম উলঙ্গ সে ছেলে ধুলি-'পরে বসে আছে পা-দুখানি মেলে। ঘাটে বসে মাটি ঢেলা লইয়া কুড়ায়ে দিদি মাজিতেছে ঘটী ঘুরায়ে ঘুরায়ে। অদূরে কোমললোম ছাগবৎস ধীরে চরিয়া ফিরিতেছিল নদী-তীরে-তীরে।…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খোকার চোখে যে ঘুম আসে      সকল-তাপ-নাশা-- জান কি কেউ কোথা হতে যে      করে সে যাওয়া-আসা। শুনেছি রূপকথার গাঁয়ে জোনাকি-জ্বলা বনের ছায়ে দুলিছে দুটি পারুল-কুঁড়ি,      তাহারি মাঝে বাসা-- সেখান…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে। বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর, আউশের ক্ষেত জলে ভরভর, কালি-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার যেতে ইচ্ছে করে      নদীটির ওই পারে --      যেথায় ধারে ধারে বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো      বাঁধা সারে সারে। কৃষাণেরা পার হয়ে যায়      লাঙল কাঁধে ফেলে;      জাল টেনে নেয়…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করো, যেন বিদেশ ঘুরে মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে। তুমি যাচ্ছ পালকিতে, মা, চড়ে দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে, আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার পরে টগ্‌বগিয়ে তোমার পাশে…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমি ভালোবাসি আমার নদীর বালুচর, শরৎকালে যে নির্জনে চকাচকির ঘর। যেথায় ফুটে কাশ তটের চারি পাশ, শীতের দিনে বিদেশি সব হাঁসের বসবাস। কচ্ছপেরা ধীরে রৌদ্র পোহায় তীরে, দু-একখানি…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি, দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি। চিক্ চিক্…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি, আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি। কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই, কোন মাঠে…