গোপালের বিয়ে

গোপাল নতুন পোষাক করিয়ে এনেছে। কাল রাত্রে তার বিয়ে। এই পোষাক পরেই গোপাল বিরক্তভাবে তার মাকে বললে, “জানো মা, ব্যাটা দর্জি আমার পাঞ্জাবীটা লম্বায় দুই ইঞ্চি বড় করে ফেলেছে।”

পরদিন সকালবেলায় গোপাল জিনিষ-পত্র কেনা-কাটা করবার জন্যে বেরিয়ে গেল। তখন মায়ের মনে হলো, বেচারীর পাঞ্জাবীটা দুই ইঞ্চি বেশি লম্বা রয়েছে। কেটে ঠিক করে দিলে তো হয়!

তিনি কাউকে কিছু না বলে উপরে উঠে গেলেন এবং ছেলের ঘরে বসে জামাটার নিচ থেকে দুই-ইঞ্চি কেটে বাদ দিয়ে দিলেন। তারপর কাটা মুখটা সেলাই করে নিচে নেমে এলেন।

গোপালের বাড়িতে ছিল দুই-বোন। গত রাত্রিতে খাওয়ার সময় দাদার মন্তব্য তারাও শুনেছিল। ওই রকম বেমানান লম্বা পাঞ্জাবী পরে বিয়ে করতে গেলে দাদাকে দেখে সবাই হাসবে, এ জিনিষ তাদের দুইয়েরই অসহ্য মনে হলো।

কিন্তু কেউ কাউকে নিজের মনের কথাটি খুলে বললে না।

কিছু পরে বড় বোন আবার দু-ইঞ্চি কেটে বাদ দিয়ে সেলাই করে দিল। তারপর ছোট বোনও চুপি চুপি ঘরে প্রবেশ করে পাঞ্জাবির ঝুল নিচ থেকে দুই-ইঞ্চি কেটে সেলাই করে দিল।

এদের কাজ কেউই জানতে পারল না। সন্ধ্যাবেলায় বিয়ের সাজ পরতে গিয়ে বরের চক্ষুস্থির! যে পাঞ্জাবী দুই ইঞ্চি লম্বা ছিল তা উলটে চার ইঞ্চি খাটো কি করে হলো, তা সে কিছুতেই বুঝতে পারল না।

সে ঘোড়ার গাড়ি ডেকে দর্জির দোকানে ছুটল এর কারণ জিজ্ঞেস করতে। দর্জিকে জিজ্ঞেস করাতে সে কিছুই বুঝতে পারল না। গোপাল রেগে-মেগে দর্জিকে দু’চার কথা শুনিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এলো।

বাড়ি এসে সকলের মুখে সব কথা শুনে গোপালের চক্ষুস্থির। বাধ্য হয়ে গোপাল তাড়াতাড়ি বাজারে গিয়ে আর একটা পাঞ্জাবী-কিনে তাই পরে রেগে-মেগে বিয়ে করতে গেল।